এই উপমহাদেশে বৃটিশ শাসনামলে পাবলিক কাজের তদারকি করার জন্য ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে একটি সামরিক বোর্ড গঠন করা হয়। পরবর্তীকালে ১৮৫৪ সালে সরকার গণপূর্ত অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন সময়ে পিডব্লিউডি ভবন নির্মাণ, রাস্তাঘাট তৈরী, রেলওয়ের কাজের পাশাপাশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ কাজ এবং সেনা বাহিনীর কাজও সম্পাদন করত। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্মাণ কাজের দ্বায়িত্ব সেন্ট্রাল পিডব্লিউডি এর উপর ন্যস্ত করা হয়। একই সাথে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের নির্মাণ কাজের দ্বায়িত্বভার অর্পন করা হয় তৎকালীন কমিউনিকেশন এন্ড বিল্ডিং ডিরেক্টোরেট (C&B) এর উপর।
মহান স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তীকালে ১৯৭৭ সালে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত দুই বৃহৎ প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে সেন্ট্রাল পিডব্লিউডি এবং প্রাদেশিক সরকারের বিল্ডিং ডিরেক্টোরেট একীভূত করে বর্তমান পিডব্লিউডি তৈরী করা হয়।
১৮৫৪ সালে যাত্রা শুরু করে দুই শতাব্দীর অভিজ্ঞতা নিয়ে পিডব্লিউডি সুনামের সাথে উপমহাদেশের স্থাপত্য কাঠামো নির্মাণের মহান দ্বায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজের সাথে জাতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
গণপূর্ত অধিদপ্তর নিজস্ব নির্মাণ কাজের পাশাপাশি ২৪ টি মন্ত্রণালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ নিরলসভাবে সম্পাদন করে যাচ্ছে। এই অধিদপ্তর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ৮টি নির্বাহী প্রতিষ্ঠানের অন্যতম। এটি সরকারের বৃহৎ নির্মাণ সংস্থা।
গণপুর্ত অধিদপ্তরের কর্মপরিধি শুধু শহরাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নয়। এই কার্যক্রম দূরবর্তী জেলা সদর, প্রত্যন্ত গ্রাম, সীমান্তবর্তী এলাকা এমনকি দেশের প্রত্যন্ত দূর্গম স্থানেও বিস্তৃত। ফলশ্রুতিতে দেখা যাচ্ছে যে, যেখানে একসময় জীবন ছিলো নিষ্প্রভ সেসব জায়গাতেও বৈচিত্রময় প্রকল্পের সম্প্রসারণে জীবনযাত্রার উন্নতি সাধন ঘটেছে অবারিতভাবে। জাতিকে সেবা করার এই মহান দ্বায়িত্ব পালন করতে গণপূর্ত অধিদপ্তর মানব সম্পদের কার্যকর ব্যবহার করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। উন্নয়নশীল দেশের একটি প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্বেও গণপূর্ত অধিদপ্তর বৈচিত্রময় উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে সর্বনিম্ন ব্যয়ে সর্বোচ্চ কারিগরি নৈপুণ্য প্রদর্শন করে যাচ্ছে।
পিডব্লিউডি প্রতিনিয়তই সফল কার্যক্রমের অগণিত উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে। এই প্রতিষ্ঠানের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীবাহিনী একই সাথে এই মহান কাজের অংশীদার ও সম্পাদনকারী।